কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এটি রক্ত পরিশোধন করে এবং শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে। কিন্তু কিডনিতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা তীব্র ব্যথার কারণ হতে পারে, যা দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তোলে। অনেকেই কিডনি ব্যথাকে সাধারণ পিঠ বা কোমরের ব্যথা ভেবে ভুল করেন, যার ফলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয় না।
আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগে, কিডনি ব্যথা দূর করার উপায় এবং কিডনির ব্যথা কোথায় হয়? এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিডনির ব্যথার সঠিক অবস্থান কোথায়, কীভাবে এই ব্যথা সাধারণ পিঠের ব্যথা থেকে আলাদা, এবং এই কষ্টকর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু কার্যকরী উপায়। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে এই ব্লগটি আপনাকে সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিডনি ব্যথা এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত।
কিডনির ব্যথা কোথায় হয়?
কিডনির ব্যথা মানব শরীরের অন্যতম যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতির মধ্যে একটি, কিন্তু এর অবস্থান নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তি থাকে। বেশিরভাগ মানুষই এটিকে সাধারণ পিঠের বা কোমরের ব্যথার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। তবে কিডনির ব্যথা কোথায় হয় তা সঠিকভাবে জানা থাকলে দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা শুরু করা সহজ হয়। সাধারণভাবে, কিডনির ব্যথা সাধারণত ফ্ল্যাঙ্ক অঞ্চলে (Flank Area) অনুভূত হয়।
ব্যথার প্রধান কেন্দ্র (ফ্ল্যাঙ্ক এরিয়া)
কিডনি দুটি প্রধানত পেটের ভেতরের দিকে, মেরুদণ্ডের উভয় পাশে এবং পাঁজরের খাঁচার (Rib Cage) ঠিক নিচে অবস্থিত। এই কারণে, কিডনির ব্যথার প্রাথমিক এবং সবচেয়ে সাধারণ স্থানটি হলো পিঠের মাঝামাঝি অংশ। যা কোমরের ঠিক ওপরে এবং পাঁজরের শেষ অংশের নিচে থাকে। এই বিশেষ স্থানটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ফ্ল্যাঙ্ক এরিয়া বলা হয়।
- ডান বা বাম দিক: ব্যথা একতরফা (ডান দিকে বা বাম দিকে) হতে পারে, যা নির্দেশ করে যে কোন কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে (যেমন পলিসিস্টিক কিডনি রোগ বা উভয় কিডনিতে সংক্রমণ) উভয় পাশেও ব্যথা হতে পারে।
- গভীরতার অনুভূতি: এই ব্যথা ত্বকের উপরিভাগের বা পেশির টান জনিত ব্যথার মতো নয়, এটি অনেক গভীর এবং শরীরের অভ্যন্তর থেকে আসা এক ধরনের যন্ত্রণা। এটি সাধারণত একটি ভোঁতা, একটানা ব্যথা হিসাবে শুরু হতে পারে।
পেটে ও কুঁচকিতে ছড়িয়ে পড়া
কিডনির ব্যথার প্রকৃতি অনুযায়ী এটি বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিডনিজনিত ব্যথার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর সঞ্চারণশীলতা। ব্যথার মূল কেন্দ্র ফ্ল্যাঙ্ক এরিয়া হলেও, এটি কিডনি থেকে মূত্রনালী (Ureter) হয়ে নিচের দিকে নামতে পারে।
বিশেষত, যদি ব্যথার কারণ হয় কিডনিতে পাথর (Renal Colic), তবে ব্যথাটি চরম আকার ধারণ করে এবং নিম্নলিখিত স্থানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে:
- পেটের নিচের অংশে (Lower Abdomen): ব্যথা পিঠ থেকে শুরু হয়ে সামনের দিকে পেটের নিচের দিকে চলে আসতে পারে।
- কুঁচকির দিকে (Groin Area): এটি পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত সাধারণ। কুঁচকিতে তীব্র এবং স্পন্দনশীল ব্যথা অনুভূত হয়।
- পুরুষদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষে (Testicles): ব্যথা কুঁচকি হয়ে অণ্ডকোষ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

পিঠে ও কিডনি ব্যথার পার্থক্য কোথায়?
সাধারণ মাংসপেশির টান বা মেরুদণ্ডের (Spinal) সমস্যাজনিত পিঠের ব্যথার সঙ্গে কিডনির ব্যথাকে আলাদা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই বিভ্রান্ত হন যে, সাধারণ পিঠের ব্যথা আর কিডনির ব্যথা কোথায় হয় তার মধ্যে পার্থক্য কী।
| বৈশিষ্ট্য | কিডনির ব্যথা (Kidney Pain) | পিঠের ব্যথা (Musculoskeletal Pain) |
| অবস্থান | পাঁজরের নিচে, কোমরের ওপরে (ফ্ল্যাঙ্ক এরিয়া), গভীরের দিকে। | কোমরের নিচের অংশে বা পিঠের পেশি বরাবর, উপরিভাগের দিকে। |
| সঞ্চারণ | পেটের দিকে, কুঁচকি এবং যৌনাঙ্গের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। | সাধারণত ছড়িয়ে পড়ে না বা পায়ে নামতে পারে (যদি সায়াটিকা থাকে)। |
| অনুভূতি | সাধারণত ভোঁতা, অবিরাম ব্যথা বা তীব্র, স্পন্দনশীল (পাথরজনিত কারণে)। | হাঁটা, ওঠা-বসা বা মোচড়ানোর সময় বৃদ্ধি পায়। |
| অন্যান্য উপসর্গ | জ্বর, বমি বমি ভাব, প্রস্রাবে রক্ত বা জ্বালাপোড়া প্রায়ই থাকে। | সাধারণত জ্বর বা প্রস্রাবে সমস্যা থাকে না। |
ব্যথার তীব্রতা এবং ধরন কেন ভিন্ন হয়?
ব্যথার তীব্রতা এবং এটি কীভাবে অনুভূত হয় তা নির্ভর করে কিডনির সমস্যার প্রকৃতির ওপর:
- তীব্র শূলবেদনা (Renal Colic): এটি পাথর যখন মূত্রনালীর মাধ্যমে যেতে শুরু করে তখন ঘটে। এই ব্যথা হঠাৎ শুরু হয় এবং তীব্রতা এত বেশি হয় যে রোগীরা অস্থির হয়ে পড়েন। এই তীব্র প্রকৃতির ব্যথা দেখেও দ্রুত বোঝা যায় যে এই ব্যথা কিডনির ব্যথা কোথায় হয় তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
- ভোঁতা বা অবিরাম ব্যথা: কিডনিতে সংক্রমণ (Pyelonephritis), সিস্ট (Cyst) বা অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়। এটি কম তীব্র হলেও সারাদিন ধরে চলতে থাকে।
কিডনি ব্যথা দূর করার উপায়
কিডনি ব্যথা যখন শুরু হয়, তখন যেন জীবন থমকে যায়! পিঠের ফ্ল্যাঙ্ক অঞ্চলে শুরু হওয়া এই তীব্র যন্ত্রণা প্রায়শই মানুষকে অস্থির করে তোলে। তবে ভয় পাবেন না, এই ব্যথা চিরস্থায়ী নয়। মনে রাখবেন, কিডনি দেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই এর ব্যথাকে শুধু ব্যথানাশক দিয়ে চাপা দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়, বরং গোড়া থেকে কারণ খুঁজে সমাধান করা জরুরি।
১. কিডনি ব্যথা করলে কি করণীয়?
তীব্র কিডনি ব্যথা হঠাৎ আক্রমণ করে। এই সময় আপনার মাথা ঠান্ডা রাখা এবং দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। প্রথম যে প্রশ্নটি মাথায় আসা উচিত তা হলো: কিডনি ব্যথা করলে কি করণীয়? এর উত্তর এক কথায়: ব্যথাকে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কিছু লক্ষণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া আবশ্যক:
- উচ্চ জ্বর ও কাঁপুনি: ব্যথার সঙ্গে যদি ১০১°F বা তার বেশি জ্বর এবং শরীর কাঁপা শুরু হয়, তবে এটি কিডনি বা মূত্রনালীর গুরুতর সংক্রমণের (Sepsis) লক্ষণ হতে পারে।
- বমি বা বমি বমি ভাব: যদি ব্যথার কারণে আপনি জল বা খাবার কিছুই পেটে রাখতে না পারেন, তাহলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়তে পারে।
- প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া: যদি ব্যথা থাকা সত্ত্বেও প্রস্রাব না হয়, তবে এটি মূত্রনালীর সম্পূর্ণ blockage নির্দেশ করে, যা কিডনির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ব্যথার উৎস এবং রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া
আপনার ডাক্তারই ঠিক করে দেবেন কার্যকরভাবে কিডনি ব্যথা দূর করার উপায় কী হবে। এটি করার জন্য তিনি কিছু পরীক্ষা করবেন:
- আল্ট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasound): এটি একটি দ্রুত এবং সহজ পরীক্ষা যা কিডনিতে পাথর, সিস্ট বা ফোলা আছে কিনা তা দেখায়।
- সিটি স্ক্যান (CT Scan): বিশেষত পাথরের সঠিক আকার, অবস্থান এবং ঘনত্ব জানার জন্য এটি অপরিহার্য।
- প্রস্রাব পরীক্ষা (Urine Test): এই পরীক্ষা কিডনির সংক্রমণ (UTI) বা রক্তপাত নির্ণয়ে সাহায্য করে। প্রস্রাবে শ্বেত রক্তকণিকা (WBC) বা নাইট্রেট উপস্থিতি সংক্রমণ নিশ্চিত করে।
মূল কারণ ভিত্তিক চিকিৎসা
- সংক্রমণের সমাধান: যদি ব্যথার কারণ মূত্রনালীর বা কিডনির সংক্রমণ (পাইলোনেফ্রাইটিস) হয়, তবে ডাক্তার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকস (Antibiotics) কোর্স লিখে দেবেন। মনে রাখবেন, কোর্স সম্পূর্ণ না করা এই ধরনের কিডনি ব্যথা দূর করার উপায় নয়, এতে সংক্রমণ ফিরে আসার ঝুঁকি বাড়ে।
- পাথর অপসারণ: পাথরের আকার অনুযায়ী চিকিৎসা হয়। ছোট পাথর (সাধারণত ৪-৫ মিমি-এর নিচে) হলে প্রচুর জল পানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক উপায়ে বের করার চেষ্টা করা হয়। বড় পাথরের ক্ষেত্রে Shockwave Lithotripsy (ESWL) বা অভ্যন্তরীণ সার্জারি (URS/PCNL) এর মাধ্যমে তা ভেঙে বা বের করে আনা হয়।
২. কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করার পাশাপাশি সাময়িক আরাম পাওয়ার জন্য কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলি আপনার যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব করতে পারে:
- হাইড্রেশন হলো প্রধান অস্ত্র: এটি সবচেয়ে সহজ এবং শক্তিশালী কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে মূত্রের প্রবাহ বাড়ে এবং ছোট পাথর বা ব্যাকটেরিয়া কিডনি থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। দৈনিক কমপক্ষে ১০-১২ গ্লাস পরিষ্কার পানি পান করুন। যদি আপনার মূত্র হালকা হলদে বা প্রায় স্বচ্ছ থাকে, তাহলে বুঝবেন আপনার হাইড্রেশন ঠিক আছে। তবে, কিডনি ফেইলিওর রোগীদের পানি পানের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- লেবুর রসের জাদু: লেবুতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রেট থাকে। এই সাইট্রেট মূত্রে ক্যালসিয়াম স্ফটিক জমা হতে বাধা দেয়, যা ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর গঠনের প্রধান কারণ। তাই প্রতিদিন সকালে হালকা গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা একটি চমৎকার প্রতিরোধমূলক এবং উপশমমূলক কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়।
- উষ্ণ সেঁকের আরাম (Warm Therapy): ব্যথার অঞ্চলে একটি গরম জলের বোতল বা হিটিং প্যাড ব্যবহার করুন। তাপ দিলে ঐ স্থানের পেশিগুলো শিথিল হয়, বিশেষত পাথরের কারণে সৃষ্ট মূত্রনালীর খিঁচুনি (spasm) কমে। গরম সেঁক প্রয়োগ করা তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়ার একটি পরীক্ষিত উপায়।
- তুলসি ও সেলারি জুস: তুলসির পাতা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে বিবেচিত হয়। সামান্য তুলসি পাতার রস মধু দিয়ে মিশিয়ে সেবন করা যেতে পারে। এছাড়া, ধনে পাতার রস মূত্রবর্ধক (Diuretic) হিসেবে কাজ করে এবং কিডনি ফ্লাশ করতে সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন, এগুলো সাপ্লিমেন্ট, চিকিৎসার বিকল্প নয়।
- নির্দিষ্ট খাবার এড়িয়ে চলুন: টমেটোর বীজ, অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার, চকোলেট, কফি এবং রেড মিট এই জিনিসগুলো সাময়িকভাবে কমিয়ে দিন। এগুলি অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিড পাথরের প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩. ওষুধ এবং ফার্মাকোলজিক্যাল চিকিৎসা
তীব্র ব্যথার সময় কেবল ঘরোয়া উপায়ে কাজ হয় না। ডাক্তার প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে কিডনি ব্যথা দূর করার উপায় নিশ্চিত করেন।
- ব্যথানাশক ও প্রদাহ কমানো: ডাক্তার সাধারণত নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) যেমন ডাইক্লোফেনাক বা আইবুপ্রোফেন প্রেসক্রাইব করেন, যা ব্যথা কমানোর পাশাপাশি কিডনি বা ইউরেটারে সৃষ্ট প্রদাহ কমায়।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা: যদি আপনার কিডনির কার্যকারিতা দুর্বল থাকে, তবে NSAIDs এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ এটি কিডনির ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
- পেশি শিথিলকারী (Alpha-Blockers): পাথরের ক্ষেত্রে ট্যামসুলোসিন (Tamsulosin) এর মতো ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এটি মূত্রনালী বা ইউরেটারের পেশিগুলোকে শিথিল করে দেয়। এর ফলে পাথরের পক্ষে মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসা সহজ হয় এবং ব্যথার তীব্রতাও কমে আসে।
৪. কিডনি ব্যথাতে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ
ব্যথা দূর করার পরেই কাজ শেষ নয়। ভবিষ্যতে যাতে এই যন্ত্রণা ফিরে না আসে, তার জন্য জীবনযাত্রায় স্থায়ী পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এটিই হলো দীর্ঘমেয়াদী কিডনি ব্যথা দূর করার উপায়:
- ডায়েট এবং পুষ্টির ভারসাম্য: আপনার খাদ্যাভ্যাস আপনার কিডনি পাথরের ধরন নির্ধারণ করে। অক্সালেট পাথর হলে পালংশাক, বাদাম এবং চা সীমিত করুন। ইউরিক অ্যাসিড পাথর হলে রেড মিট এবং অ্যালকোহল পরিহার করুন। পটাশিয়াম (যেমন কলা) এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কিডনির কার্যকারিতা ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ: অতিরিক্ত ওজন কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রতিদিন হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম, যেমন দ্রুত হাঁটা বা ইয়োগা, কিডনির রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- লবণ ও চিনি নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতির একটি প্রধান কারণ। ডায়েটে লবণের পরিমাণ কমিয়ে (প্রতিদিন ৫ গ্রামের নিচে) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত চিনি পানীয় (Soda/Juice) কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়।
মনে রাখবেন, কিডনি ব্যথা করলে কি করণীয় তার সঠিক ধারণা রাখা এবং প্রতিটি ব্যথার পিছনে লুকিয়ে থাকা কারণকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া অত্যাবশ্যক। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আপনি আপনার কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারেন এবং যন্ত্রণামুক্ত জীবন যাপন করতে পারেন।
অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য উত্তরা বা বনানী শাখায় সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে +8801774678604 নম্বরে যোগাযোগ করুন।
আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ পেইন কিউর
বিস্তারিত জানুন: কোমর ব্যথা ও কিডনি ব্যথার পার্থক্য
বিস্তারিত জানুন: কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়
বিস্তারিত জানুন: গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথার কারণ
বিস্তারিত জানুন: বহুমূত্র রোগ কি? কোন হরমোনের অভাবে বহুমূত্র রোগ হয়?
সাধারণ জিজ্ঞাসা
কিডনিতে পাথর হলে কি ক্রিয়েটিনিন বাড়ে?
কিডনিতে পাথর হলে ক্রিয়েটিনিন সাধারণত বাড়ে না, যদি না পাথর কিডনির কার্যক্ষমতা বা প্রস্রাবের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। যদি পাথরের কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা প্রস্রাব আটকে যায়, তবে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়তে পারে। এটি নির্ভর করে পাথরের আকার, অবস্থান এবং জটিলতার উপর।
কিডনি রোগে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কত?
কিডনি রোগে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা সাধারণত ১.২ মিগ্রা/ডিএল (পুরুষ) বা ১.০ মিগ্রা/ডিএল (মহিলা) এর উপরে থাকে। এটি রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে বাড়তে পারে, যেমন দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ২.০ বা তার বেশি হতে পারে। সঠিক মাত্রা জানতে ডাক্তারের পরামর্শ ও পরীক্ষা প্রয়োজন।
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ কী কী?
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, পা বা মুখে ফোলাভাব, তীব্র ক্লান্তি, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ত্বকে চুলকানি। এছাড়া প্রস্রাবে রক্ত, শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথাও হতে পারে। লক্ষণগুলো রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।

Dr. Saiful Islam, PT, is a Consultant Physiotherapist with expertise in Orthopedics. He holds a BPT from Dhaka University, an MPT, and a Postgraduate Certification in Acupuncture from India, with specialized training in Ozone Therapy.





