কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে এবং এটি হলে কি করতে হবে

কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে এবং এটি হলে কি করতে হবে

Table of Contents

কিডনিতে পাথর (Kidney Stone) একটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক এবং সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি মানবদেহের ভেতরের খনিজ পদার্থ জমে কঠিন স্ফটিক বা পাথরের মতো রূপ নেওয়ার ফল। এই পাথর যখন কিডনি থেকে মূত্রনালীর (Ureter) দিকে অগ্রসর হতে থাকে, তখন তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এই অবস্থায় সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। আমাদের আজকের এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে এবং একইসাথে এই পরিস্থিতিতে কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি রোধ করার উপায় । এই সমস্যার মোকাবিলা করতে সচেতনতা, সঠিক খাদ্যভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন অপরিহার্য।

কিডনিতে পাথর সমস্যাটি আসলে কী

কিডনিতে পাথর সমস্যাটি আসলে কী?

কিডনি আমাদের শরীরের ছাঁকনি বা ফিল্টার হিসেবে কাজ করে, যা রক্ত ​​থেকে অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য এবং অতিরিক্ত পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। যখন প্রস্রাবে নির্দিষ্ট খনিজ এবং লবণ খুব বেশি পরিমাণে ঘনীভূত হয়, তখন সেগুলি স্ফটিক তৈরি করে। সময়ের সাথে সাথে এই স্ফটিকগুলিই কঠিন পাথরে পরিণত হয়, যাকে আমরা কিডনিতে পাথর বা রেনাল ক‍্যালকুলী (Renal Calculi) বলি। পাথরের আকার ছোট হলে অনেক সময় কোনো লক্ষণ ছাড়াই প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যেতে পারে। কিন্তু পাথর বড় হলে তা কিডনির ভেতরে বা মূত্রনালীর পথে আটকে গিয়ে তীব্র ব্যথা, সংক্রমণ এবং কিডনির কার্যকারিতায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে

কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে?

কিডনিতে পাথরের তীব্রতা এবং আকার ভেদে চিকিৎসার ধরণ ভিন্ন হয়। ছোট পাথর সাধারণত নিজে থেকেই শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, কিন্তু বড় পাথরের জন্য সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে। তবে, কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ আছে যা কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে এর উত্তরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (Hydration is Key)

ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা কিডনিতে পাথর তৈরির একটি প্রধান কারণ। তাই, কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে তার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর হলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। পর্যাপ্ত পানি পান করলে প্রস্রাব পাতলা হয়, যা খনিজ পদার্থকে স্ফটিক আকারে জমতে বাধা দেয়। এটি ছোট পাথরগুলিকে মূত্রনালী দিয়ে বের করে দিতেও সাহায্য করে।

  • লক্ষ্য: দৈনিক কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লিটার বা ৮-১০ গ্লাস জল পান করার লক্ষ্য রাখুন। তবে, আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানির পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।
  • প্রসাবের রঙ: প্রস্রাবের রঙ হালকা হলুদ বা প্রায় পরিষ্কার হওয়া উচিত। গাঢ় হলুদ বা বাদামী প্রস্রাব নির্দেশ করে যে আপনি পর্যাপ্ত পানি পান করছেন না।

২. চিকিৎসকের পরামর্শ ও সঠিক রোগ নির্ণয়

পাথরের ধরণ, আকার এবং অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে একজন ইউরোলজিস্ট বা নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক রক্ত ​​ও প্রস্রাব পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান বা আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করবেন। আপনার কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে সেই বিষয়ে চিকিৎসকই উপযুক্ত চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করবেন।

৩. ব্যথা কমানোর ব্যবস্থাপনা

কিডনির পাথরের ব্যথা অত্যন্ত তীব্র হতে পারে। ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসক সাধারণত নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) বা অন্যান্য ব্যথানাশক ওষুধ দেবেন। অনেক সময় প্রস্রাবের পথকে শিথিল করার জন্য আলফা ব্লকার (Alpha Blockers) জাতীয় ওষুধও দেওয়া হয়, যা পাথর বের হতে সাহায্য করে।

খাদ্য ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন

৪. খাদ্য ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন

দীর্ঘমেয়াদে কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে তার জন্য খাদ্য ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন অপরিহার্য। পাথরের ধরণ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।

  • কম সোডিয়াম: উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণ প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা ক্যালসিয়াম পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়ায়। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন।
  • প্রাণীজ প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ: লাল মাংস এবং অন্যান্য প্রাণীজ প্রোটিন অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা ইউরিক অ্যাসিড পাথর তৈরি করে।
  • অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার: যদি আপনার ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর হয়ে থাকে, তবে পালং শাক, চকোলেট, বাদাম, মিষ্টি আলু এবং কিছু ধরণের চায়ের মতো উচ্চ অক্সালেটযুক্ত খাবার পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। লেবুর রস অক্সালেট বাইন্ডিংয়ে সাহায্য করে।
  • ক্যালসিয়াম গ্রহণ: ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার (যেমন দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য) সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া উচিত নয়। খাদ্যের ক্যালসিয়াম অন্ত্রে অক্সালেটের সাথে যুক্ত হয়ে পাথর গঠন রোধ করতে পারে। তবে, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত নয়।

৫. ঘরোয়া প্রতিকার (সাপ্লিমেন্টারি)

চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও সাহায্য করতে পারে। যেমন:

  • লেবুর রস: লেবুতে সাইট্রেট থাকে, যা প্রস্রাবের pH বাড়িয়ে পাথর তৈরি রোধ করতে পারে এবং ছোট পাথর ভাঙতে সাহায্য করতে পারে।
  • তুলসী পাতা: তুলসীর রস কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং পাথরজনিত ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

তবে মনে রাখবেন, এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো কেবল সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, এটি মূল চিকিৎসার বিকল্প নয়।

কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে

কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে

নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বা ব্যায়াম কেবল সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নয়, কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা কিডনিতে পাথর হওয়ার একটি ঝুঁকির কারণ। এছাড়া, ব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কিছু বিপাকীয় উপাদানের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে যা পাথর গঠনে অবদান রাখে। কিন্তু কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে সে সম্পর্কে একটি সতর্ক এবং সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন।

১. হাঁটা এবং জগিং (Walking and Jogging)

পাথর বের করে দেওয়ার জন্য হাঁটা বা হালকা জগিং অত্যন্ত উপকারী। শরীরের নড়াচড়ার ফলে ছোট পাথরগুলি মূত্রনালী দিয়ে নিচের দিকে নেমে আসে।

  • নিয়ম: দৈনিক ৩০-৪০ মিনিটের জন্য দ্রুত হাঁটা বা হালকা জগিং করুন। এটি কেবল পাথর সরাতে সাহায্য করবে না, বরং আপনার কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যও উন্নত করবে।
  • সতর্কতা: পাথরের কারণে তীব্র ব্যথা থাকলে বা ডাক্তার বিশ্রাম নিতে বললে, জোর করে হাঁটা বা দৌড়ানো এড়িয়ে চলতে হবে।

যোগাসন (Yoga and Stretching)

২. যোগাসন (Yoga and Stretching)

যোগাভ্যাস বা স্ট্রেচিং শরীরকে নমনীয় রাখতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। নির্দিষ্ট কিছু যোগাসন কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।

  • পশ্চিমোত্তাসন (Paschimottanasana): এই আসনটি পেটের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে চাপ সৃষ্টি করে, যা হজম এবং কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • পদহস্তাসন (Padahastasana): এই আসনটি শরীরের সামনের অংশে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়িয়ে কিডনির স্বাস্থ্যে সাহায্য করে।
  • সতর্কতা: কোনো নতুন যোগাসন শুরু করার আগে বা কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে সেই বিষয়ে আপনার যোগ প্রশিক্ষক বা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা জরুরি, বিশেষত যদি আপনার তীব্র ব্যথা থাকে।

৩. কম তীব্রতার ব্যায়াম (Low Impact Exercises)

ভারী ব্যায়াম বা শক্তি প্রশিক্ষণের (Weight Training) মতো উচ্চ তীব্রতার ব্যায়ামের চেয়ে কম তীব্রতার ব্যায়ামগুলি বেশি নিরাপদ এবং উপকারী।

  • সাঁতার কাটা (Swimming): এটি একটি চমৎকার লো ইমপ্যাক্ট ব্যায়াম যা জয়েন্টের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি না করেই পুরো শরীরকে সক্রিয় রাখে।
  • সাইকেল চালানো (Cycling): স্থির সাইকেল চালানো বা হালকাভাবে সাইকেল চালানোও উপকারী।

৪. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

স্থূলতা কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম ঝুঁকির কারণ। নিয়মিত ব্যায়াম এবং একটি সুষম খাদ্য গ্রহণ করে শরীরের স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা আবশ্যক। কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে তার প্রধান লক্ষ্যগুলির মধ্যে একটি হওয়া উচিত ওজন নিয়ন্ত্রণ।

হাইড্রেটেড থাকা নিশ্চিত করুন (Hydration During Exercise)

৫. হাইড্রেটেড থাকা নিশ্চিত করুন (Hydration During Exercise)

ব্যায়ামের সময় শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে জল বেরিয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন ঘটাতে পারে এবং পাথরের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ব্যায়ামের আগে, চলাকালীন এবং পরে পর্যাপ্ত পানি পান করা নিশ্চিত করতে হবে।

কখন ব্যায়াম এড়িয়ে চলবেন?

যদি আপনার কিডনির পাথরের কারণে তীব্র ব্যথা, জ্বর, প্রস্রাবে রক্ত, বা বমি বমি ভাব হয়, তাহলে অবশ্যই ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। মনে রাখবেন, কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে তা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই স্থির করা উচিত।

কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে (চিকিৎসার বিকল্পসমূহ)

কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে (চিকিৎসার বিকল্পসমূহ)

ছোট পাথর সাধারণত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান এবং ওষুধের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন পাথরগুলি বড় হয় বা মূত্রনালীতে গুরুতর বাধা সৃষ্টি করে, তখন বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে সেই বিষয়ে কয়েকটি প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি নীচে আলোচনা করা হলো:

১. এক্সট্রাকর্পোরিয়াল শক ওয়েভ লিথোট্রিপসি (ESWL)

এই পদ্ধতিতে শরীরের বাইরে থেকে উচ্চ শক্তির শব্দ তরঙ্গ (Shock Waves) প্রয়োগ করে পাথরগুলিকে ছোট ছোট টুকরোতে ভেঙে দেওয়া হয়, যা পরে প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে আসে। এটি একটি অপেক্ষাকৃত অ-আক্রমণকারী (non invasive) পদ্ধতি।

২. ইউরেটেরোস্কোপি (Ureteroscopy – URS)

যখন পাথর মূত্রনালীর (Ureter) কাছাকাছি থাকে, তখন ইউরেটেরোস্কোপি ব্যবহার করা হয়। একটি সরু টেলিস্কোপের মতো যন্ত্র মূত্রনালী দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। এরপর লেজার ব্যবহার করে পাথর ভেঙে ফেলা হয় অথবা পাথর অপসারণের জন্য ফোর্সেপ ব্যবহার করা হয়।

৩. পারকিউটেনিয়াস নেফ্রোলিথোটমি (PCNL)

এটি বড় পাথরের জন্য সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে পিঠের ত্বকের মাধ্যমে একটি ছোট ছিদ্র করে কিডনিতে সরাসরি পৌঁছানো হয় এবং পাথরগুলি অপসারণ করা হয় বা ভেঙে বের করে আনা হয়।

৪. ওপেন সার্জারি (Open Surgery)

বর্তমানে খুব কমই প্রয়োজন হয়, তবে খুবই বড় বা জটিল পাথরের ক্ষেত্রে এটি করা হয়।

কিডনিতে পাথর ভবিষ্যতের জন্য পুনরাবৃত্তি রোধে করণীয়

কিডনিতে পাথর ভবিষ্যতের জন্য পুনরাবৃত্তি রোধে করণীয়

যারা একবার কিডনিতে পাথর সমস্যায় ভুগেছেন, তাদের জন্য এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে এবং এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি এড়াতে কি করা উচিত তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:

  • পর্যাপ্ত পানি: সারা জীবন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস বজায় রাখুন।
  • ডায়েট মডিফিকেশন: পাথরের প্রকারভেদ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা নিয়ন্ত্রণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার ইউরিক অ্যাসিড পাথর হয়, তবে পিউরিন (Purine) সমৃদ্ধ খাবার (যেমন কিছু মাংস এবং মাছ) কম খান। যদি ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর হয়, তাহলে অক্সালেট গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করুন।
  • ওষুধ: পাথর প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসক কিছু ওষুধ দিতে পারেন, যেমন- থিয়াজাইড ডাইউরেটিকস (Thiazide Diuretics) বা পটাসিয়াম সাইট্রেট (Potassium Citrate), যা প্রস্রাবের উপাদানগুলিকে পরিবর্তন করে পাথর গঠন রোধ করে।
  • নিয়মিত ফলোআপ: নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করুন যাতে কোনো নতুন পাথর তৈরি হলে তা দ্রুত ধরা পড়ে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখুন, যেমনটি আলোচনা করা হয়েছে কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে অংশে।

কিডনিতে পাথর একটি কষ্টদায়ক সমস্যা হলেও, সঠিক চিকিৎসা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে এটি সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। আপনার চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চলুন এবং সুস্থ থাকুন। মনে রাখবেন, এই সমস্যার ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথর হলে কি করতে হবে সেই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শই চূড়ান্ত।

অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য উত্তরা বা বনানী শাখায় সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে +8801774678604 নম্বরে যোগাযোগ করুন।

আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ পেইন কিউর

 

বিস্তারিত জানুন: কিডনি ব্যথা দূর করার উপায় এবং কিডনির ব্যথা কোথায় হয়?

বিস্তারিত জানুন: কোমর ব্যথা ও কিডনি ব্যথার পার্থক্য: কিভাবে বুঝবেন কোনটি কী?

বিস্তারিত জানুন: কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয় এবং কি করতে হবে?

বিস্তারিত জানুন: পুরুষের ডায়াবেটিস হলে কি সন্তান হয়?

সাধারণ জিজ্ঞাসা

কিডনিতে পাথর হলে অক্সালেটসমৃদ্ধ খাবার যেমন পালং শাক, ঝালরসা, বিট, বাদাম, চকোলেট এড়িয়ে চলুন। লাল মাংস, অর্গান মিট, সার্ডিন, অ্যাঙ্কোভি, বিয়ারের মতো পিউরিনযুক্ত খাবার কম খান। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, লবণাক্ত স্যুপ, লাঞ্চ মিট এবং চিনিযুক্ত বা ফিজি ড্রিঙ্কস এড়ান। লবণের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করুন, দৈনিক ২৩০০ মিলিগ্রামের নিচে রাখুন।

কিডনি পাথর গলাতে লেবুর রস নিয়মিত পান করুন, এতে সাইট্রেট পাথর ভাঙতে সাহায্য করে। ডালিমের রস, অ্যাপল সাইডার ভিনেগার, তুলসীর রস এবং সেলারি জুসও পাথর গলানোর জন্য উপকারী। কিডনি বীনের স্যুপ বা ড্যান্ডেলিয়ন টি খান, এগুলো প্রাকৃতিকভাবে পাথর দূর করতে সহায়ক।

কিডনিতে পাথর হলে ডাবের জল খাওয়া যায় এবং এটি উপকারী, কারণ এতে সাইট্রেট বাড়ায় যা মূত্রে ক্রিস্টাল জমা রোধ করে এবং পাথর গঠন প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মূত্রের পটাশিয়াম ও সাইট্রেট বাড়িয়ে পাথরের ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন ১-২ গ্লাস খেতে পারেন, তবে কিডনি রোগ থাকলে পটাশিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন।

কিডনিতে পাথর হলে সাধারণত পিঠের নিচের দিকে বা পাশে তীব্র ব্যথা হয়, যা পেট বা কুঁচকিতে ছড়িয়ে যায়। মূত্রে রক্ত, মূত্রক্ষরণে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া, বমি বমি ভাব এবং জ্বর-ঠান্ডা লাগার মতো লক্ষণ দেখা যায়। মূত্র গন্ধযুক্ত বা ঘোলাটে হলে সন্দেহ করুন। সন্দেহ হলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

কিডনি নষ্ট হওয়ার লক্ষণ হিসেবে অতিরিক্ত ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং অ্যানিমিয়া দেখা যায়, কারণ কিডনি ইরিথ্রোপোয়েটিন হরমোন তৈরি করতে পারে না। শরীরে ফোলা, বিশেষ করে পা, হাত, চোখের নিচে, এবং মূত্রে ফেনা বা রক্ত মিশে যাওয়া সাধারণ লক্ষণ। মূত্রক্ষরণে পরিবর্তন যেমন ঘন ঘন মূত্রত্যাগ (বিশেষ করে রাতে), কম মূত্র বা বমি-বমি ভাব, তৃষ্ণা বাড়া ঘটতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *