পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম এবং পায়ের গোড়ালি ব্যথার সমাধান

পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম এবং পায়ের গোড়ালি ব্যথার সমাধান

Table of Contents

কল্পনা করুন, সকালে বিছানা থেকে উঠে প্রথম পায়ে পড়তেই একটা তীব্র চাপ অনুভব করছেন, যেন কেউ আপনার গোড়ালিতে ছুরি মারছে! এই পায়ের গোড়ালি ব্যথা কি আপনারও জীবনকে থামিয়ে দিয়েছে? চিন্তা করবেন না, আপনি একা নন। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন, কিন্তু ভালো খবর হলো পায়ের গোড়ালি ব্যথার সমাধান আছে! আজকের এই ব্লগে আমরা পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম এর মজাদার এবং কার্যকর উপায় নিয়ে কথা বলব, যাতে আপনি বাড়িতেই শুরু করতে পারেন।

আমরা শুধু ব্যায়ামের ধাপগুলো বলব না, বরং ব্যথার গল্প, বাস্তব টিপস, এবং পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম এর মাধ্যমে কীভাবে আপনার পা আবার সচল হয়ে উঠবে তা জানাবো। এছাড়া, গোড়ালির ব্যথার ব্যায়াম এর সাথে যোগ করে যোগাসন, ডায়েট এবং প্রতিরোধের সিক্রেট শেয়ার করব।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম প্রথম ধাপ (স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ)

পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম: প্রথম ধাপ (স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ)

স্ট্রেচিং = ম্যাজিক! এটি পায়ের মাসলগুলোকে ‘ঢিলা’ করে, ব্যথা কমায়। পায়ের গোড়ালি ব্যায়াম দিনে ২ বার করুন, সকালে বিছানায়, রাতে টিভি দেখতে দেখতে। চলুন, ৩টা সুপার স্ট্রেচিং জেনে নেই:

ক্যাল্ফ স্ট্রেচ: দেওয়ালের সাথে ‘পুশ-আপ’

কীভাবে করবেন?

দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে শুরু করুন। আপনার পিছনের পা সোজা রাখুন এবং হাঁটু সামান্য বাঁকিয়ে শরীরটি দেওয়ালের দিকে ঠেলুন। এই অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি দু’ভাবে করুন: প্রথমে হাঁটু সোজা রেখে, এবং দ্বিতীয়বার হাঁটু বাঁকিয়ে। এই সাধারণ ব্যায়ামটি গোড়ালির চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত করলে দ্রুত উন্নতি দেখা যায়।

  • কেন মজা? এটি গোড়ালির ব্যথার একটি কার্যকরী ব্যায়াম, যা রক্ত চলাচল বাড়িয়ে প্রদাহ দূর করে এবং পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে। ফলে ব্যথা কমে এবং চলাফেরা সহজ হয়ে ওঠে!
  • চ্যালেঞ্জ: প্রতি পায়ে ৩ রাউন্ড করে করুন। অফিসে বা বাড়িতে চেয়ারের সাহায্যে এটি চেষ্টা করুন। এতে আরও সুবিধাজনক হবে এবং দৈনন্দিন রুটিনে সহজেই যুক্ত করতে পারবেন।
  • টিপ: যদি ব্যথা বেশি হয়, তাহলে সোকস পরে করুন যাতে অতিরিক্ত সাপোর্ট পান। এছাড়া, পেইন কিউরের ইলেক্ট্রো আকুপাংচার থেরাপি যোগ করলে আরও দ্রুত রিলিফ পাবেন।

প্ল্যান্টার ফ্যাসিয়া স্ট্রেচ: আঙ্গুল ‘পুল’ গেম

কীভাবে করবেন?

বসে পা সামনে বাড়িয়ে নিন এবং আঙ্গুলগুলো টেনে ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি সকালে বিছানায় করতে আইডিয়াল, শুয়ে শুয়েই করুন, যাতে দিনের শুরুতেই গোড়ালি নমনীয় হয়ে ওঠে। এই স্ট্রেচটি সহজ এবং কোনো সরঞ্জাম ছাড়াই করা যায়, যা ব্যথা কমাতে সরাসরি সাহায্য করে।

  • কেন কাজ করে? এটি পায়ের গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি সরাসরি ব্যায়াম, যা ফ্যাসিয়া (পেশীর আবরণ) নমনীয় করে তোলে। ফলে টেনশন কমে, রক্ত চলাচল বাড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদী আরাম পাওয়া যায়!
  •  চ্যালেঞ্জ: প্রতি পায়ে ৫ রাউন্ড করে করুন। ফ্রোজেন বোতল দিয়ে রোলিং যোগ করুন (আইসের সাথে স্ট্রেচ) এতে ঠান্ডা থেরাপি এবং ম্যাসাজ একসাথে হয়ে প্রদাহ দ্রুত কমবে।
  • টিপ: পেইন কিউরের ক্রায়ো থেরাপি এর সাথে মিলিয়ে করলে ব্যথা সম্পূর্ণ কমাতে সাহায্য করবে।

অ্যাঙ্কেল সার্কেল: ঘুরিয়ে ‘ডান্স’ করুন

কীভাবে করবেন?

বসে পা সামনে বাড়িয়ে গোড়ালিটি ঘুরান। প্রথমে ১০ বার ঘড়ির কাঁটার দিকে, তারপর ১০ বার উল্টো দিকে। এটি ধীরে ধীরে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে করুন, যাতে জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। সকালে বা সন্ধ্যায় বসে করলে সবচেয়ে সুবিধাজনক, এবং এই সাধারণ রুটিনটি দৈনন্দিন জীবনে সহজেই যুক্ত করা যায়, কোনো সরঞ্জামের দরকার নেই।

  • কেন মজাদার? এটি পায়ের গোড়ালির জন্য একটি মজাদার এবং কার্যকরী ব্যায়াম, যা জয়েন্টগুলোকে লুব্রিকেট করে এবং স্টিফনেস (জড়তা) গলে দিয়ে চলাফেরা সহজ করে তোলে। নিয়মিত করলে রক্ত চলাচল বাড়ে, ব্যথা কমে এবং পায়ের নমনীয়তা ফিরে আসে, ফলে দৈনন্দিন কাজকর্মে আরাম পাবেন।
  • চ্যালেঞ্জ: ৩ সেট করে করুন, প্রতি সেটে ১০-১০ রোটেশন। যদি আর্থ্রাইটিস থাকে, তাহলে ধীরে ধীরে শুরু করুন এবং ব্যথা অনুভব হলে থামুন – এতে জয়েন্টগুলো ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে উঠবে।
  • টিপ: পেইন কিউরের PEMF (পালসড ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড) থেরাপির সাথে মিলিয়ে করলে জয়েন্টগুলো নতুনের মতো হয়ে উঠবে।

পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম দ্বিতীয় ধাপ (স্ট্রেংথেনিং বা পায়ের 'মাসল বিল্ডার')

পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম: দ্বিতীয় ধাপ (স্ট্রেংথেনিং বা পায়ের ‘মাসল বিল্ডার’)

স্ট্রেচের পর আসুন শক্তি তৈরি করি। পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম এর এই অংশ পাকে ‘আয়রনম্যান’ বানাবে। ওয়ার্ম আপ করে শুরু করুন। ৩টা ফান এক্সারসাইজ:

টোয়েল রেইজ: তোয়ালে ‘ক্যাচ’ গেম

কীভাবে করবেন?

একটি ছোট তোয়ালে মেঝেতে রাখুন এবং বসে পা দিয়ে আঙ্গুলগুলো দিয়ে তোয়ালেটি নিজের দিকে টেনে আনুন, ১০ বার করুন। পায়ের আঙ্গুলগুলো শক্ত করে ধরে ধীরে ধীরে টেনুন, যাতে পায়ের আর্চে চাপ পড়ে। এটি বসে বা শুয়ে করা যায়, বিশেষ করে সকালে বা সন্ধ্যায়। কোনো সরঞ্জাম ছাড়াই এই সহজ ব্যায়ামটি দৈনন্দিন রুটিনে যোগ করুন এবং গোড়ালির চাপ কমাতে সাহায্য করে।

  • কেন সুপার? এটি গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি অসাধারণ ব্যায়াম, যা পায়ের আর্চকে শক্ত করে তোলে এবং পেশীগুলোকে মজবুত করে। নিয়মিত ৪ সপ্তাহ করলে ১৫% বুস্ট পাবেন রক্ত চলাচল বাড়ে, প্রদাহ কমে এবং চলাফেরায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসে, ফলে দীর্ঘমেয়াদী আরাম মিলবে।
  • চ্যালেঞ্জ: ২ সেট করে করুন, প্রতি সেটে ১০ রিপিটিশন। যদি আপনি রানার হন, তাহলে দৌড়ের পর এটি যোগ করুন। এতে পায়ের ক্লান্তি দ্রুত কাটবে এবং আঘাতের ঝুঁকি কমবে।
  • টিপ: পেইন কিউরের টেকার থেরাপি যোগ করুন, যাতে পেশীগুলো আরও দ্রুত রিকভার করে।

হিল রেইজ: ‘টো-স্ট্যান্ড’ চ্যালেঞ্জ

কীভাবে করবেন?

দেওয়াল ধরে দাঁড়িয়ে শুরু করুন এবং গোড়ালিটি তুলুন নামান ১৫ বার করুন, এক পায়ে অ্যাডভান্স করে (অর্থাৎ, এক পা সামনে রেখে পিছনের পায়ের গোড়ালি দিয়ে করুন)। ধীরে ধীরে তুলুন এবং নামান, যাতে ক্যাল্ফ পেশীতে ভালো চাপ পড়ে। এটি দেওয়ালের সামনে বা স্থিতিশীল জায়গায় করুন সকালে বা সন্ধ্যায় ৫-১০ মিনিট দিলেই যথেষ্ট, এবং এই সহজ ব্যায়ামটি বাড়িতে বা অফিসে সহজেই করা যায়।

  • কেন কাজ? এটি পায়ের গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি দুর্দান্ত ব্যায়াম, যা ক্যাল্ফ মাসলকে শক্ত করে তোলে এবং পুরো পায়ের সাপোর্ট বাড়ায়। নিয়মিত করলে রক্ত চলাচল উন্নত হয়, প্রদাহ কমে এবং গোড়ালির চাপ সামলাতে সাহায্য করে, ফলে চলাফেরা সহজ এবং ব্যথা দ্রুত কমে যায়।
  • চ্যালেঞ্জ: ৩ সেট করে করুন, প্রতি সেটে ১৫ রিপিটিশন। সিঁড়ির ধাপে দাঁড়িয়ে ট্রাই করুন। এতে আরও গভীর স্ট্রেচ হয় এবং পায়ের শক্তি দ্বিগুণ বাড়বে, কিন্তু ব্যথা অনুভব হলে ধীরে করুন।

মার্বল পিকআপ: ‘পিক অ্যান্ড ড্রপ’

কীভাবে করবেন?

বসে পা সামনে বাড়িয়ে ২০টি ছোট মার্বল (বা ছোট বল) মেঝেতে ছড়িয়ে রাখুন এবং আঙ্গুল দিয়ে তুলে একটি পাত্রে রাখুন, সম্পূর্ণ ৫ মিনিট ধরে করুন। আঙ্গুলগুলো শক্ত করে ধরে ধীরে ধীরে তুলুন, যাতে পায়ের ছোট পেশীগুলোতে চাপ পড়ে। এটি বসে বা শুয়ে করা যায়, বিশেষ করে বাড়িতে বা অফিস ডেস্কে। কোনো বিশেষ সরঞ্জাম ছাড়াই এই মজাদার ব্যায়ামটি দৈনন্দিন রুটিনে যোগ করুন এবং গোড়ালির নিয়ন্ত্রণ উন্নত করুন।

  • কেন মজা? এটি পায়ের গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি মজাদার ব্যায়াম, যা পায়ের ডেক্সটারিটি (দক্ষতা) বাড়িয়ে তোলে এবং ছোট পেশীগুলোকে শক্ত করে। নিয়মিত করলে রক্ত চলাচল উন্নত হয়, প্রদাহ কমে এবং চলাফেরায় ভালো গ্রিপ পাবেন। ফলে ব্যথা দূর হয় এবং পায়ের সেন্সরি ফিডব্যাক মজবুত হয়।
  • চ্যালেঞ্জ: ২ সেট করে করুন, প্রতি সেটে ৫ মিনিট। যদি বয়স্ক হন, তাহলে গেমের মতো খেলুন। সময় নিয়ে উপভোগ করুন এবং ধীরে ধীরে গতি বাড়ান, যাতে এটি বিরক্তিকর না হয়ে বরং আনন্দদায়ক লাগে।

এই গোড়ালির ব্যথার ব্যায়াম ২ সপ্তাহে ৫০% ব্যথা কমাবে। করিমের মতো আপনিও সাকসেস স্টোরি হোন!

গোড়ালির ব্যথার ব্যায়াম তৃতীয় ধাপ (ব্যালেন্সিং)

গোড়ালির ব্যথার ব্যায়াম: তৃতীয় ধাপ (ব্যালেন্সিং)

ভারসাম্য = সেফটি নেট! পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম এর এই অংশ পড়া রোধ করে। নিউরো কন্ট্রোল ফোকাস। ৩টা ট্রিক:

সিঙ্গল লেগ ব্যালেন্স: ‘ওয়ান-লেগ ওয়ান্ডার’

কীভাবে করবেন?

এক পায়ে দাঁড়ান এবং চোখ বন্ধ করে ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। প্রয়োজনে চেয়ার বা দেওয়ালের সাপোর্ট নিন যাতে ভারসাম্য হারানো না হয়। ধীরে ধীরে শুরু করুন, শরীর সোজা রেখে পায়ের পেশীগুলোতে ফোকাস করুন। এটি বাড়ির যেকোনো স্থিতিশীল জায়গায় করুন, সকালে বা সন্ধ্যায় চেয়ারের পাশে দাঁড়িয়ে করলে নিরাপদ এবং সহজ হয়, এবং এই সাধারণ ব্যায়ামটি দৈনন্দিন রুটিনে যোগ করে গোড়ালির স্থিতিশীলতা বাড়ান।

  • কেন আইডিয়াল? এটি গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি আইডিয়াল ব্যায়াম, যা ভারসাম্য উন্নত করে পড়ার ঝুঁকি ৩০% কমায়। নিয়মিত করলে পায়ের জয়েন্ট শক্ত হয়, রক্ত চলাচল বাড়ে এবং প্রদাহ কমে। ফলে দৈনন্দিন চলাফেরায় আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।
  • চ্যালেঞ্জ: ৩ রাউন্ড করে করুন, প্রতি রাউন্ডে ৩০ সেকেন্ড। অ্যাডভান্স করতে নরম ম্যাটে চোখ বন্ধ করে ট্রাই করুন। এতে ভারসাম্য আরও চ্যালেঞ্জিং হয় এবং পায়ের কো-অর্ডিনেশন দ্বিগুণ বুস্ট পাবে, কিন্তু সাপোর্ট ছাড়া করবেন না।
  •  টিপ: পেইন কিউরের ওজোন সওনা যোগ করুন, যাতে স্নায়ু শক্ত হয় এবং প্রদাহ দ্রুত কমে।

সাইড টু সাইড হিল রোক: ‘সুইং সুইং’

কীভাবে করবেন?

বসে পা সামনে বাড়িয়ে গোড়ালিটি বাম ডান দিকে নড়ান  ১০ বার সুইচ করুন (অর্থাৎ, বাম থেকে ডানে এবং ডান থেকে বামে ১০-১০ বার)। ধীরে ধীরে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে মুভ করুন, যাতে জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। এটি চেয়ারে বসে বা বিছানায় শুয়ে করুন। সকালে উঠে বা সন্ধ্যায় রিল্যাক্স করে, কোনো সরঞ্জাম ছাড়াই এই সহজ ব্যায়ামটি দৈনন্দিন রুটিনে যোগ করুন এবং গোড়ালির গতিশীলতা ধীরে ধীরে ফিরিয়ে আনুন।

  •  কেন ফান? এটি পায়ের গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি ফান এবং আনন্দদায়ক ব্যায়াম, যা গতিশীলতা বাড়িয়ে জয়েন্টগুলোকে নমনীয় করে তোলে। নিয়মিত করলে রক্ত চলাচল উন্নত হয়, স্টিফনেস কমে এবং চলাফেরায় স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে আসে।
  •  চ্যালেঞ্জ: ২ সেট করে করুন, প্রতি সেটে ১০-১০ সুইচ। টিভি দেখার সময় এটি যোগ করুন, এতে সময় কাটবে না বরং উপভোগ্য হয়ে উঠবে, এবং বসে বসে করায় অফিস বা বাড়ির রুটিনে সহজেই ফিট হয়ে যাবে।
  • টিপ: ছোট রেঞ্জ থেকে শুরু করুন, যাতে ব্যথা না হয় এবং ধীরে ধীরে রেঞ্জ বাড়ান

বোসু বল ব্যালেন্স: ‘অ্যাডভান্স অ্যাডভেঞ্চার’

কীভাবে করবেন?

একটি ছোট বল (বা সফট বল) এর উপর এক পায়ে দাঁড়িয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। যদি বল না থাকে, তাহলে পিলো বা নরম কুশন দিয়ে সিমুলেট করুন যাতে ভারসাম্য চ্যালেঞ্জিং হয়। শরীর সোজা রেখে হাত দুটো ছড়িয়ে ভারসাম্য ধরে রাখুন, এবং চোখ খোলা রাখুন শুরুতে। এটি বাড়ির নিরাপদ জায়গায় করুন, সকালে উঠে বা সন্ধ্যায় চেয়ারের পাশে সাপোর্ট রেখে শুরু করলে নিরাপদ।

  • কেন স্মার্ট? এটি পায়ের গোড়ালির ব্যথার জন্য একটি স্মার্ট ব্যায়াম, যা কোর স্ট্যাবিলিটি (মূল শরীরের স্থিতিশীলতা) উন্নত করে পায়ের জয়েন্টগুলোকে সাহায্য করে। নিয়মিত করলে রক্ত চলাচল বাড়ে, প্রদাহ কমে এবং পড়ার ঝুঁকি কমে। ফলে চলাফেরায় আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং ব্যথা থেকে দীর্ঘমেয়াদী মুক্তি পাওয়া যায়।
  •  চ্যালেঞ্জ: ৩ রাউন্ড করে করুন, প্রতি রাউন্ডে ২০ সেকেন্ড। ধীরে ধীরে সময় বাড়ান এবং চোখ বন্ধ করে ট্রাই করুন। এতে কো-অর্ডিনেশন দ্বিগুণ হয় এবং পায়ের সেন্সরি ফিডব্যাক মজবুত হয়, কিন্তু সাপোর্ট ছাড়া করবেন না যাতে আঘাত না হয়।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার সমাধান

পায়ের গোড়ালি ব্যথার সমাধান

পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম এর সাথে চিকিৎসা মিক্স করুন। পেইন কিউর (Pain Cure) একটি আধুনিক ও বিশ্বস্ত পেইন ম্যানেজমেন্ট সেন্টার, যেখানে নানা ধরনের শারীরিক ব্যথার জন্য উন্নত ও এডভান্স চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এখানে আমরা ওজোন থেরাপি, ওজোন সওনা, ইলেক্ট্রো আকুপাংচার, আর-টি-এম-এস থেরাপি, ম্যানুয়াল ফিজিওথেরাপি, টেকার থেরাপি, ক্রায়ো থেরাপি, শকওয়েভ থেরাপি ও পালস ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাপি (PEMF) এর মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এছাড়া ও ঘরোয়া ব্যায়াম, ব্যথা প্রতিরোধে পরামর্শ এবং চিকিৎসকদের মতামতও তুলে ধরা হয়। পেইন কিউরের লক্ষ্য হল সবার কাছে ব্যথামুক্ত, সুস্থ ও সচেতন জীবনযাপনের বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

আইস থেরাপি: ‘কুল ডাউন’ ম্যাজিক

কীভাবে করবেন?

প্রথমে ১৫ মিনিটের জন্য বরফ প্যাক (বা ফ্রোজেন ভেজিটেবল ব্যাগ) গোড়ালিতে লাগান। একটি পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন যাতে ত্বক জমে না যায়। এরপর RICE পদ্ধতি ফলো করুন: Rest (বিশ্রাম নিন), Ice (আইস লাগান), Compression (হালকা ব্যান্ডেজ দিয়ে চেপে ধরুন), Elevation (পা উঁচু করে রাখুন হৃদয়ের স্তরের উপরে)। দিনে ৩-৪ বার করুন, বিশেষ করে ব্যায়ামের পর, এটি বাড়িতে সহজেই করা যায় এবং তাৎক্ষণিক আরাম দেয়।

  • কেন কাজ করে? এটি গোড়ালির ব্যথা কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী, কারণ ঠান্ডা প্রদাহ কমায়, ফোলা নামায় এবং রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। RICE ফলো করলে পুনরুদ্ধার দ্রুত হয় এবং আঘাতের ঝুঁকি কমে।
  • চ্যালেঞ্জ: প্রতি সেশনে ১৫ মিনিট পুরোপুরি ধরে রাখুন এবং RICE এর সব ধাপ কঠোরভাবে ফলো করুন। ১ সপ্তাহ চ্যালেঞ্জ নিন এবং প্রগ্রেস ট্র্যাক করুন।
  • টিপ: বোতল রোল (ফ্রোজেন বোতল দিয়ে গোড়ালি রোল করা) যোগ করুন পায়ের গোড়ালির ব্যায়ামের পর এটি আইডিয়াল, কারণ এতে ম্যাসাজ এবং আইস একসাথে হয়ে প্রদাহ দ্রুত কমে।

ওরথোটিক ইনসোল: ‘শু সাপোর্ট’

কীভাবে ব্যবহার করবেন?

একটি ভালো অর্থোপেডিক স্টোর বা ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে গিয়ে আপনার পায়ের ছাঁচ তৈরি করান এবং কাস্টম ইনসোল অর্ডার করুন  দাম ৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে হয়, যা আপনার পায়ের আকার অনুসারে তৈরি হয়। জুতোর ভিতরে ফিট করে নিন এবং দৈনন্দিন ব্যবহার করুন, বিশেষ করে ব্যায়ামের সময়। এটি শুরুতে অস্বস্তি দিতে পারে, তাই ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হোন। 

  • কেন সুপার? এটি গোড়ালির ব্যথা কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী, কারণ আর্চ সমর্থন দিয়ে পায়ের লোড ডিস্ট্রিবিউট করে এবং ব্যায়ামের চাপ কমায়। নিয়মিত ব্যবহারে প্রদাহ কমে, চলাফেরা সহজ হয় এবং আঘাতের ঝুঁকি ২০-৩০% কমে। ফলে দীর্ঘমেয়াদী আরাম পাবেন এবং অন্যান্য ব্যায়ামগুলো আরও কার্যকরী হয়ে উঠবে।
  • চ্যালেঞ্জ: প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা ব্যবহার করুন এবং ১ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ অভ্যস্ত হোন। এতে পায়ের স্ট্রাকচার ধীরে ধীরে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং ব্যথা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাবেন।

যোগাসন: ‘পোজ অফ পাওয়ার’

কীভাবে করবেন?

প্রথমে ডাউনওয়ার্ড ডগ পোজে যান, হাত পা ছড়িয়ে উল্টো V আকারে দাঁড়ান এবং ১ মিনিট ধরে স্ট্রেচ করুন। পায়ের গোড়ালি সোজা রেখে শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করুন। তারপর ওয়ারিয়র পোজে সুইচ করুন, এক পা সামনে বাঁকিয়ে, পিছনের পা সোজা রেখে হাত উপরে তুলুন এবং ৩০-৪৫ সেকেন্ড ধরে ব্যালেন্স করুন, দুই পায়ে সুইচ করে। এই দুটি পোজ একসাথে ১০-১৫ মিনিটের রুটিনে করুন। মেটের উপর বা নিরাপদ জায়গায়, সকালে খালি পেটে শুরু করুন। ধীরে ধীরে শ্বাসের সাথে মিলিয়ে করলে গোড়ালির চাপ কমে এবং শরীর নমনীয় হয়।

  • কেন আইডিয়াল? এই ইয়োগা রুটিন গোড়ালির ব্যথার জন্য অত্যন্ত উপকারী, কারণ ডাউনওয়ার্ড ডগ পায়ের পেশী স্ট্রেচ করে রক্ত চলাচল বাড়ায় এবং ওয়ারিয়র পোজ ব্যালেন্স বুস্ট করে জয়েন্ট শক্ত করে। নিয়মিত করলে প্রদাহ কমে, স্ট্রেস দূর হয় এবং চলাফেরায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।
  • চ্যালেঞ্জ: সপ্তাহে ৩ দিন এই রুটিন ফলো করুন। প্রতিদিন ১ মিনিট ডগ এবং ৩০ সেকেন্ড প্রতি পায়ে ওয়ারিয়র, ধীরে ধীরে সময় বাড়ান। স্ট্রেস ফ্রি থাকতে টিভি বন্ধ করে শান্ত পরিবেশে করুন। ২ সপ্তাহে উন্নতি দেখবেন এবং এটি দৈনন্দিন রুটিনে স্থায়ী করে তুলুন।

ডায়েট হ্যাক: ‘ইট ফর ফিট ফিট’

কীভাবে করবেন?

প্রতিদিন হলুদ আদা মিশিয়ে চা বা স্মুদি তৈরি করুন (আধা চামচ হলুদ + ১ ইঞ্চি আদা, গরম পানিতে ফুটিয়ে পান করুন)। ক্যালসিয়ামের জন্য দুধ বা দইয়ের সাথে পালং শাক রান্না করুন (এক গ্লাস দুধ + এক মুঠো পালং) এবং ৩ লিটার পানি সমানভাবে পান করুন (সকাল,দুপুর ও সন্ধ্যায় ১ লিটার করে)। এই রুটিনটি সকালের নাশতায় শুরু করুন এবং এটি ব্যায়ামের সাথে মিলিয়ে করলে গোড়ালির প্রদাহ দ্রুত কমে।

  • কেন কাজ করে? হলুদ-আদা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবে প্রদাহ কমায় এবং রক্ত চলাচল বাড়ায়, ক্যালসিয়াম (দুধ-পালং থেকে) হাড় এবং জয়েন্ট শক্ত করে, আর ৩ লিটার পানি ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে ফোলা কমায়। নিয়মিত করলে ব্যথা ২০-৩০% কমে এবং পায়ের স্বাস্থ্য দীর্ঘমেয়াদীভাবে উন্নত হয়।
  • চ্যালেঞ্জ: সপ্তাহে ৫ দিন এই ডায়েট ফলো করুন। প্রতিদিন ২ কাপ হলুদ আদা ড্রিঙ্ক, ১৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৩ লিটার পানি ট্র্যাক করুন। অফিসে বোতল নিয়ে যান এবং পালং স্যালাড যোগ করুন ১ মাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখবেন।

 

উত্তরা বা বনানী শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য সকাল ৯:০০ থেকে রাত ৯:০০ পর্যন্ত +৮৮০১৭৭৪৬৭৮৬০৪ নম্বরে কল করুন।

আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ পেইন কিউর

 

বিস্তারিত জানুন: পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর উপায় ও পায়ের গোড়ালি ব্যথা করে কেন?

বিস্তারিত জানুন: পায়ের লিগামেন্ট ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার উপায় ও এটির লক্ষণ কি?

বিস্তারিত জানুন: Best Physiotherapy Center in Dhaka

বিস্তারিত জানুন: Best Physiotherapy Center in Uttara

সাধারণ জিজ্ঞাসা

গোড়ালির ব্যথা অপসারণের জন্য RICE পদ্ধতি অনুসরণ করুন: বিশ্রাম নিন (Rest), বরফের সেঁক দিন (Ice) ২০ মিনিট করে, চাপ দিন (Compression) এবং উঁচু করে রাখুন (Elevation)। ওভার-দ্য-কাউন্টার পেইন রিলিভার যেমন আইবুপ্রোফেন সেবন করতে পারেন, কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ নিন। স্প্রেইন কমলে হালকা স্ট্রেচিং বা এক্সারসাইজ করুন, যাতে গতিশীলতা ফিরে আসে। যদি ব্যথা ৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকে, তাহলে চিকিৎসক দেখান।

ঘুমের পর পায়ের গোড়ালি ব্যথা হওয়ার প্রধান কারণ রাত্রিকালীন নিষ্ক্রিয়তার ফলে জয়েন্টের সিনোভিয়াল ফ্লুইড কমে যাওয়া, যা সকালে শক্ততা ও ব্যথা সৃষ্টি করে। আর্থ্রাইটিস (যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা রিউমাটয়েড), পূর্ববর্তী স্প্রেইন বা অতিরিক্ত ব্যবহারও এর জন্য দায়ী হতে পারে। অ্যাকিলিস টেন্ডিনাইটিস বা প্ল্যান্টার ফ্যাসিয়াইটিসের মতো সমস্যাও সকালের ব্যথা বাড়াতে পারে। যদি ব্যথা কয়েক দিন অব্যাহত থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, কারণ নিজে চিকিত্সা ঝুঁকিপূর্ণ।

পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে আঘাত যেমন স্প্রেইন বা ফ্র্যাকচার, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা বসে থাকা, অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত ওজন। গুরুতর কারণ হিসেবে হার্ট ফেলিয়র, কিডনি বা লিভারের সমস্যা, ভেইনাস ইনসাফিশিয়েন্সি বা থাইরয়েড ডিসঅর্ডারও দায়ী হতে পারে। গর্ভাবস্থা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ইনফেকশনও এর ফলে হয়। যদি ফোলা কয়েক দিন অব্যাহত থাকে বা ব্যথা/লালভাব দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসক দেখান, কারণ নিজে চিকিত্সা ঝুঁকিপূর্ণ।

প্লান্টার ফ্যাসিয়াইটিস পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সৃষ্টি করে কারণ এতে প্লান্টার ফ্যাসিয়া (হিল থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত একটি মোটা টিস্যু ব্যান্ড) প্রদাহিত হয়ে যায়, যা হিলের হাড়ে সংযুক্ত থাকায় সকালে বা বিশ্রামের পর তীব্র ব্যথা হয়। অতিরিক্ত ব্যবহার, টাইট ক্যাল্ফ মাসল, ভুল জুতো বা অতিরিক্ত ওজন এর কারণ হয়ে ফ্যাসিয়ায় ছোট ছোট ছিঁড়ে যাওয়া ঘটায়। এটি প্রায়শই সকালে প্রথম পদক্ষেপে ব্যথা বাড়ায়। যদি ব্যথা কয়েক সপ্তাহ অব্যাহত থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, কারণ নিজে চিকিত্সা ঝুঁকিপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *