বাম বা ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

বাম বা ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

পায়ের গোড়ালি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিদিন হাঁটাচলা, দৌড়ানো, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা নামা করার সময় আমাদের পায়ের গোড়ালিতে অনেক চাপ পড়ে। অনেক সময় এই চাপের কারণে বা অন্যান্য কারণে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি, কারণ এই ব্যথা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অনেক কষ্টকর করে তুলতে পারে। আজকের এই ব্লগে আমরা বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এবং ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পায়ের গোড়ালি ব্যথা কী এবং কেন হয়

পায়ের গোড়ালি ব্যথা কী এবং কেন হয়?

পায়ের গোড়ালি হলো আমাদের পায়ের নিচের সেই অংশ যেখানে পায়ের হাড়, মাংসপেশি, লিগামেন্ট এবং টেন্ডন একসাথে কাজ করে। যখন এই অংশে কোনো সমস্যা হয়, তখন আমরা ব্যথা অনুভব করি। পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার জানার আগে বুঝতে হবে যে এই ব্যথা হঠাৎ করেও হতে পারে, আবার ধীরে ধীরে বাড়তেও পারে।

অনেকে মনে করেন শুধু বয়স্ক মানুষদের পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হয়, কিন্তু বাস্তবে যেকোনো বয়সের মানুষের এই সমস্যা হতে পারে। ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করতে গিয়ে, তরুণরা ব্যায়াম বা দৌড়ানোর সময়, এবং বয়স্করা দীর্ঘদিনের বিভিন্ন সমস্যার কারণে পায়ের গোড়ালি ব্যথায় ভুগতে পারেন।

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ

অনেকেই প্রশ্ন করেন যে বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার কী? সাধারণত বাম বা ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ একই হলেও, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ কারণে একটি নির্দিষ্ট পায়ে বেশি ব্যথা হতে পারে।

আঘাত বা মচকানো

বাম পায়ের গোড়ালিতে আঘাত পেলে বা মচকে গেলে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। হাঁটতে গিয়ে পা বেঁকে গেলে, খেলাধুলার সময় হঠাৎ পা পিছলে গেলে, বা সিঁড়ি থেকে পড়ে গেলে এমন হতে পারে। বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার খুঁজতে গেলে দেখা যায় যে অনেক সময় আঘাত প্রথম কারণ হিসেবে দেখা দেয়।

প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস

এটি একটি সাধারণ সমস্যা যেখানে পায়ের তলার একটি বিশেষ টিস্যুতে প্রদাহ হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম পা মাটিতে দেওয়ার সময় যদি প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে এটি প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস হতে পারে।

আর্থ্রাইটিস বা বাত

বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকের বাম পায়ের গোড়ালিতে আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যা দেখা দেয়। এতে হাড়ের জয়েন্টে ফুলে যাওয়া এবং ব্যথা হয়। বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার জানতে গেলে আর্থ্রাইটিস একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

টেন্ডিনাইটিস

টেন্ডন হলো যে শক্ত রজ্জু মাংসপেশিকে হাড়ের সাথে যুক্ত করে। এই টেন্ডনে প্রদাহ হলে তাকে টেন্ডিনাইটিস বলে। বেশি হাঁটাহাঁটি বা দৌড়ানোর কারণে এটি হতে পারে।

ভুল জুতা পরা

অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর বা ভুল মাপের জুতা পরলে বাম পায়ের গোড়ালিতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হয়। হাই হিল বা একদম সমতল জুতা দীর্ঘক্ষণ পরলে এই সমস্যা হতে পারে।

অতিরিক্ত ওজন

শরীরের অতিরিক্ত ওজন পায়ের গোড়ালিতে বেশি চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা শুরু হতে পারে।

ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পায়ের নার্ভের ক্ষতি হতে পারে, যাকে নিউরোপ্যাথি বলে। এর ফলে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা, জ্বালাপোড়া বা অসাড়তা অনুভব হতে পারে।

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার মূলত বাম পায়ের মতোই। তবে কিছু মানুষ ডান পা বেশি ব্যবহার করেন, যেমন গাড়ি চালানোর সময় বা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় প্রথমে ডান পা দিয়ে শুরু করেন। এর ফলে ডান পায়ে বেশি চাপ পড়ে এবং ব্যথা হতে পারে।

অতিরিক্ত পরিশ্রম

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার খুঁজতে গেলে দেখা যায় যে যারা পুরো দিন দাঁড়িয়ে কাজ করেন, যেমন দোকানদার, শিক্ষক, বা নার্স, তাদের ক্ষেত্রে ডান পায়ে বেশি চাপ পড়ে যদি তারা ডান পায়ে বেশি ভর দেন।

হিল স্পার

হিল স্পার হলো গোড়ালির হাড়ে একটি ছোট হাড়ের বৃদ্ধি যা ব্যথা সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন দাঁড়িয়ে থাকলে বা ভুল জুতা পরলে এটি হতে পারে।

বার্সাইটিস

বার্সা হলো একটি ছোট তরল থলি যা জয়েন্টের মধ্যে ঘর্ষণ কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রদাহ হলে তাকে বার্সাইটিস বলে এবং এটি ডান পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।

গেঁটেবাত বা গাউট

গাউট হলো এক ধরনের আর্থ্রাইটিস যেখানে জয়েন্টে ইউরিক এসিড জমা হয়। এটি প্রচণ্ড ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া সৃষ্টি করে। ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার জানতে গাউট একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

ফ্র্যাকচার বা হাড় ভাঙা

দুর্ঘটনা বা পড়ে গিয়ে যদি ডান পায়ের গোড়ালির হাড় ভেঙে যায়, তাহলে প্রচণ্ড ব্যথা হবে এবং হাঁটতে পারবেন না।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার সাধারণ লক্ষণ

পায়ের গোড়ালি ব্যথার সাধারণ লক্ষণ

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার বুঝতে হলে লক্ষণগুলো জানা জরুরি। কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:

  • হাঁটতে গেলে গোড়ালিতে ব্যথা অনুভব করা
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম কয়েক পদক্ষেপে তীব্র ব্যথা
  • দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর উঠে দাঁড়ালে ব্যথা
  • গোড়ালি ফুলে যাওয়া বা লাল হয়ে যাওয়া
  • গোড়ালিতে চাপ দিলে ব্যথা অনুভব করা
  • হাঁটতে বা দৌড়াতে সমস্যা হওয়া
  • রাতে ঘুমের মধ্যে ব্যথায় জেগে উঠা

পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার

পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার

এবার আসি পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এর প্রতিকার অংশে। অনেক ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায়ে পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানো সম্ভব।

বিশ্রাম নেওয়া

পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে প্রথম এবং সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো বিশ্রাম নেওয়া। অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো বা দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধ করুন। পা উঁচু করে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

বরফ সেঁক দেওয়া

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার বা ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার – উভয় ক্ষেত্রেই বরফ সেঁক খুব কার্যকর। একটি পরিষ্কার কাপড়ে বরফ নিয়ে ব্যথার জায়গায় ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখুন। দিনে ৩-৪ বার এটি করতে পারেন। বরফ ফোলা কমাতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।

গরম সেঁক

কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে পুরনো ব্যথার ক্ষেত্রে গরম সেঁক উপকারী। গরম পানিতে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে ব্যথার জায়গায় রাখুন। এটি রক্ত চলাচল বাড়ায় এবং মাংসপেশি শিথিল করে।

ম্যাসাজ বা মালিশ

আলতো করে পায়ের গোড়ালি মালিশ করলে ব্যথা কমে এবং রক্ত চলাচল বাড়ে। আপনি হাত দিয়ে বা একটি টেনিস বল দিয়ে পায়ের তলায় ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। সরিষার তেল বা নারকেল তেল গরম করে মালিশ করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়।

সঠিক জুতা পরা

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এর একটি বড় অংশ হলো সঠিক জুতা পরা। এমন জুতা বেছে নিন যা আরামদায়ক, সঠিক মাপের এবং ভালো সাপোর্ট দেয়। হিল না খুব বেশি হওয়া উচিত, না একদম সমতল। ২.৫ থেকে ৫ সেন্টিমিটার হিল আদর্শ।

স্ট্রেচিং ব্যায়াম

নিয়মিত পায়ের স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে গোড়ালির ব্যথা কমে। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে কয়েক মিনিট স্ট্রেচিং করুন। দেওয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে পা পেছনে টেনে ধরে রাখলে ভালো স্ট্রেচ হয়।

ওজন কমানো

যদি আপনার ওজন বেশি থাকে, তাহলে ওজন কমানোর চেষ্টা করুন। এটি পায়ের গোড়ালির উপর চাপ কমাবে এবং ব্যথা কমতে সাহায্য করবে।

পর্যাপ্ত পানি পান

শরীরে পানির অভাব হলে মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প হতে পারে যা ব্যথা বাড়ায়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিশেষভাবে যদি চিন্তা করি, তাহলে লক্ষ্য করতে হবে আপনি কি বাম পা বেশি ব্যবহার করছেন কিনা। যদি তাই হয়, তাহলে দুই পায়ে সমান ভর দেওয়ার অভ্যাস করুন।

ফিজিওথেরাপি

বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এর জন্য ফিজিওথেরাপি খুব কার্যকর। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বিশেষ ব্যায়াম শেখাবেন যা আপনার বাম পায়ের গোড়ালির শক্তি বাড়াবে এবং ব্যথা কমাবে।

অর্থোটিক্স ব্যবহার

অর্থোটিক্স হলো বিশেষ ধরনের জুতার ইনসোল বা প্যাড যা পায়ের সঠিক আর্চ সাপোর্ট দেয়। এটি বাম পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এ অনেক সাহায্য করে।

কমপ্রেশন ব্যান্ডেজ

বাম পায়ের গোড়ালিতে কমপ্রেশন ব্যান্ডেজ বা ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে রাখলে সাপোর্ট পাওয়া যায় এবং ফোলা কমে।

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার

ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এর জন্যও একই ধরনের চিকিৎসা প্রযোজ্য। তবে যদি আপনি গাড়ি চালান বা এমন কাজ করেন যেখানে ডান পা বেশি ব্যবহার হয়, তাহলে সেই কাজে কিছুক্ষণ বিরতি নিন।

রাতের স্প্লিন্ট

প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের জন্য রাতের স্প্লিন্ট খুব উপকারী। এটি ঘুমানোর সময় পা সোজা রাখে এবং সকালের ব্যথা কমায়। ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এর জন্য এটি চমৎকার কাজ করে।

শক্তিবর্ধক ব্যায়াম

শুধু স্ট্রেচিং নয়, শক্তিবর্ধক ব্যায়ামও জরুরি। পায়ের আঙুল দিয়ে তোয়ালে টেনে তোলা, মার্বেল তুলে অন্য পাত্রে রাখা। এসব ছোট ব্যায়াম ডান পায়ের শক্তি বাড়ায়।

ইলেক্ট্রোথেরাপি

কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার TENS (Transcutaneous Electrical Nerve Stimulation) মেশিন ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে পারেন, এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

শেষ কথা (বাম বা ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার)

শেষ কথা (বাম বা ডান পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার)

পায়ের গোড়ালির ব্যথা, যা প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস, আঘাত, আর্থ্রাইটিস, ভুল জুতো বা অতিরিক্ত ওজন এর কারণে বাম বা ডান যে পায়েই হোক না কেন, তা দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বড় বাধা সৃষ্টি করে। এই ধরনের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে ও একটি স্বচ্ছন্দ জীবন দিতে, পেইন কিউর (Pain Cure) একটি আধুনিক পেইন ম্যানেজমেন্ট সেন্টার হিসেবে কাজ করে। এখানে ওজোন থেরাপি, ইলেক্ট্রো আকুপাংচার, শকওয়েভ থেরাপি, ম্যানুয়াল ফিজিওথেরাপি, টেকার থেরাপি এবং পালস ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাপি (PEMF) সহ উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা হয়। গোড়ালি ব্যথার সঠিক যত্ন ও চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ, সচেতন এবং ব্যথামুক্ত জীবনযাপন নিশ্চিত করাই পেইন কিউরের লক্ষ্য।

 

উত্তরা বা বনানী শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য সকাল ৯:০০ থেকে রাত ৯:০০ পর্যন্ত +৮৮০১৭৭৪৬৭৮৬০৪ নম্বরে কল করুন।

আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ পেইন কিউর

 

বিস্তারিত জানুন: পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর উপায় ও পায়ের গোড়ালি ব্যথা করে কেন?

বিস্তারিত জানুন: পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম এবং পায়ের গোড়ালি ব্যথার সমাধান

বিস্তারিত জানুন: Best Physiotherapy Center in Uttara

বিস্তারিত জানুন: Best Physiotherapy Center in Dhaka

সাধারণ জিজ্ঞাসা

গোড়ালির বাইরের দিকে ব্যথা হওয়া কিন্তু ফোলা না হওয়ার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হল পেরোনিয়াল টেন্ডিনোপ্যাথি বা টেন্ডোনাইটিস, যা অতিরিক্ত ব্যবহার, পুনরাবৃত্তিমূলক চাপ (যেমন দৌড়ানো বা হাঁটার বেশি), অনুপযুক্ত জুতো, পায়ের অ্যালাইনমেন্ট সমস্যা বা পূর্বের আঘাতের কারণে ঘটে এবং ব্যথা সাধারণত কার্যকলাপের সময় বাড়ে কিন্তু ফোলাভাব সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় না। অন্যান্য কারণ হিসেবে আর্থ্রাইটিস (যেমন রিউমাটয়েড বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস), হাই অ্যাঙ্কেল স্প্রেইন, স্নায়ু চাপ বা অসম্পূর্ণ নিরাময়ও দায়ী হতে পারে, যা ব্যথা সৃষ্টি করে কিন্তু দৃশ্যমান ফোলা ছাড়াই। এমন লক্ষণ দেখলে অবিলম্বে একজন অর্থোপেডিক ডাক্তার বা ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করুন, কারণ সঠিক নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা (যেমন এক্স-রে বা আল্ট্রাসাউন্ড) প্রয়োজন এবং নিজে চিকিৎসা করলে অবস্থা খারাপ হতে পারে।

হ্যাঁ, গোড়ালির ব্যথা কখনও কখনও হার্টের রোগের সাথে যুক্ত হতে পারে, যদিও এটি সাধারণত পায়ের মাসকুলোস্কেলেটাল সমস্যা (যেমন স্প্রেইন বা অ্যার্থ্রাইটিস) থেকে উদ্ভূত হয়; উদাহরণস্বরূপ, কনজেস্টিভ হার্ট ফেলিয়রে শরীরে অতিরিক্ত তরল জমে গোড়ালি ও পায়ে ফোলা (edema) হয়, যা চাপ পড়লে ব্যথা সৃষ্টি করে এবং এটি হার্টের দুর্বলতার একটি সাধারণ লক্ষণ। অন্যদিকে, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD) নামক হার্ট-সম্পর্কিত সমস্যায় পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে হাঁটার সময় ক্যাল্ফ বা গোড়ালিতে ব্যথা (claudication) হতে পারে, যা স্নায়ুমণ্ডলীয় পরিবর্তন, চুল পড়া বা ত্বকের রঙ পরিবর্তনের সাথে যুক্ত। যদি ব্যথার সাথে ফোলা, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি বা অন্যান্য হার্টের লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে কার্ডিওলজিস্ট বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন, কারণ প্রাথমিক নির্ণয় (যেমন এক্স-রে বা ইকোকার্ডিওগ্রাম) জরুরি এবং নিজে চিকিৎসা করলে ঝুঁকি বাড়তে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *