আগের ব্লগে আমরা জেনে ছিলাম পিঠে ব্যথা কি কিডনি রোগের লক্ষণ নিয়ে। আজ আমরা কথা বলব একটি সাধারণ কিন্তু যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা নিয়ে ফ্রোজেন শোল্ডার। ফ্রোজেন শোল্ডার, যা মেডিক্যাল ভাষায় অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস নামে পরিচিত, কাঁধের জয়েন্টে প্রদাহ এবং শক্ততা সৃষ্টি করে যা দৈনন্দিন কাজকর্মকে কঠিন করে তোলে। এই ব্লগে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ, ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এবং ফ্রোজেন শোল্ডার এর চিকিৎসা সম্পর্কে। বিশেষ করে, ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম এবং ফ্রোজেন শোল্ডার এর চিকিৎসা এর উপর জোর দিয়ে আমরা দেখব কীভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যদি আপনি ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ অনুভব করছেন, তাহলে এই ব্লগটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হবে। চলুন শুরু করি!

ফ্রোজেন শোল্ডার কী এবং এর কারণসমূহ
প্রথমে বুঝে নেওয়া যাক ফ্রোজেন শোল্ডার কী? ফ্রোজেন শোল্ডার হলো কাঁধের জয়েন্টের আশেপাশের টিস্যুতে প্রদাহ হওয়া, যার ফলে কাঁধ শক্ত হয়ে যায় এবং নড়াচড়া সীমিত হয়ে পড়ে। এটি সাধারণত তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত: ফ্রিজিং স্টেজ (যন্ত্রণা বাড়ে), ফ্রোজেন স্টেজ (শক্ততা বাড়ে) এবং থ’ইং স্টেজ। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ প্রথমে হালকা যন্ত্রণা হিসেবে শুরু হয়, কিন্তু পরে এটি তীব্র হয়ে ওঠে। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ জানা গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রথম দিকে চিকিৎসা শুরু করলে সমস্যা কমে যায়।
কারণের কথা বললে, ফ্রোজেন শোল্ডারের সঠিক কারণ সবসময় স্পষ্ট নয়, কিন্তু এটি ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা, সার্জারির পরবর্তী জটিলতা বা দীর্ঘদিনের অসক্রিয়তার সাথে যুক্ত। মহিলাদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে ৪০-৬০ বছর বয়সীদের। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ দেখলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন, কারণ ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এবং চিকিৎসা সময়মতো শুরু করলে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব।
এখন আসুন ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ প্রধানত কাঁধে তীব্র যন্ত্রণা, যা রাতে বেশি বাড়ে। আপনি লক্ষ্য করবেন যে কাঁধ তুলতে বা ঘুরাতে অসুবিধা হচ্ছে। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে কাঁধের সীমিত গতিপ্রকৃতি, যেমন হাত উপরে তোলা বা পিছনে নেওয়া কঠিন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ অনুভব করলে ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ দেখে অনেকে উপেক্ষা করে, কিন্তু এটি ভুল। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ যদি অবহেলা করা হয়, তাহলে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণের মধ্যে কাঁধের চারপাশে ফোলাভাবও থাকতে পারে, এবং এটি বাহু বা ঘাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ চেনার জন্য আপনি সাধারণ কাজ যেমন চুল বাঁধা বা শার্ট পরা চেষ্টা করুন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ প্রথম পর্যায়ে হালকা হলেও, দ্বিতীয় পর্যায়ে কাঁধ প্রায় স্থির হয়ে যায়। এই ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ দেখলে ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম এর মাধ্যমে সক্রিয়তা ফিরিয়ে আনা যায়।

ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ
ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। প্রথম পর্যায়ে, ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ হিসেবে যন্ত্রণা শুরু হয়, যা ধীরে ধীরে বাড়ে। এই সময় ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ দেখে অনেকে ওভার-দ্য-কাউন্টার পেইনকিলার খান, কিন্তু এটি কেবল অস্থায়ী উপশম দেয়। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণের দ্বিতীয় পর্যায়ে, কাঁধের শক্ততা বাড়ে, এবং নড়াচড়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ এই পর্যায়ে সবচেয়ে কঠিন, কারণ দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়। তৃতীয় পর্যায়ে, ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ কমতে শুরু করে, কিন্তু এটি কয়েক মাস লাগতে পারে।
ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ চেনার জন্য আপনি ডাক্তারের কাছে MRI বা আল্ট্রাসাউন্ড করাতে পারেন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ যদি ডায়াবেটিসের সাথে যুক্ত হয়, তাহলে রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ দেখলে ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম শুরু করুন, কিন্তু জোর করে নয়। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণের প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত কাঁধের স্ট্রেচিং করুন। এই ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হলে আপনি সময়মতো চিকিৎসা নিতে পারবেন।
ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ অনেক সময় অন্যান্য সমস্যার সাথে মিলে যায়, যেমন আর্থ্রাইটিস বা টেন্ডোনাইটিস। তাই ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ দেখলে সঠিক ডায়াগনোসিস করান। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণের মধ্যে রাতের যন্ত্রণা সবচেয়ে কষ্টকর, কারণ এটি ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। ফ্রোজেন শোল্ডার এর লক্ষণ চিহ্নিত করে ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম এর মাধ্যমে সুস্থতা অর্জন করা সম্ভব।
ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম
ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম হলো এই সমস্যার সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম নিয়মিত করলে কাঁধের গতিপ্রকৃতি ফিরে আসে এবং যন্ত্রণা কমে। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম শুরু করার আগে উষ্ণ সেঁক দিন, যাতে পেশীগুলো নরম হয়। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর মধ্যে স্ট্রেচিং এবং স্ট্রেংথেনিং ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত।
প্রথম ব্যায়াম
পেন্ডুলাম সুইং। এটি ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর একটি সহজ অংশ। আপনাকে ঝুঁকে দাঁড়াতে হবে এবং এক হাত ঝুলিয়ে আস্তে আস্তে ঘুরাতে হবে। এই ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট করুন। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম এর এই অংশ কাঁধের জয়েন্টকে লুব্রিকেট করে।

দ্বিতীয় ব্যায়াম
টাওয়েল স্ট্রেচ। একটি টাওয়েল নিন এবং এক হাতে ধরে অন্য হাত দিয়ে পিছনে টেন। এটি ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর জন্য আদর্শ। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম এর মাধ্যমে কাঁধের অভ্যন্তরীণ রোটেশন উন্নত হয়। প্রতিদিন ৫-১০ বার করুন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এইভাবে ধীরে ধীরে শুরু করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়।
তৃতীয় ব্যায়াম
ওয়াল ক্লাইম্বিং। দেয়ালে হাত রেখে আঙ্গুল দিয়ে উপরে চড়ান। এটি ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর একটি কার্যকর অংশ। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করুন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর এই ব্যায়াম ফ্রিজিং স্টেজে খুব উপকারী।
চতুর্থ ব্যায়াম
আর্ম সার্কেল। ছোট সার্কেল থেকে শুরু করে বড় সার্কেল করুন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর মধ্যে এটি সহজ এবং কার্যকর। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম নিয়মিত করলে কাঁধের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ে। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর জন্য ১০ বার প্রতি দিকে করুন।

পঞ্চম ব্যায়াম
সাইড লায়িং স্ট্রেচ। পাশে শুয়ে হাত সোজা রেখে স্ট্রেচ করুন। এটি ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর উন্নত স্তর। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম এর মাধ্যমে পেশী শক্তিশালী হয়। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম করার সময় ধৈর্য ধরুন।
ষষ্ঠ ব্যায়াম
স্লিপার স্ট্রেচ। বিছানায় শুয়ে হাত পিছনে নিন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর এই অংশ রাতে করলে ভালো। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম নিয়মিত করলে যন্ত্রণা কমে।
সপ্তম ব্যায়াম
ক্রস-বডি রিচ। এক হাত দিয়ে অন্য কাঁধ স্পর্শ করুন। এটি ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর মৌলিক অংশ।

অষ্টম ব্যায়াম
ফিঙ্গার ওয়াক। টেবিলে আঙ্গুল দিয়ে হাঁটান। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর সহজতম। ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম করার সময় হাসুন, যাতে মন ভালো থাকে।
ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন। যদি যন্ত্রণা বাড়ে, তাহলে থামুন এবং ফিজিওথেরাপিস্টের সাহায্য নিন। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম এর সাথে ডায়েটও গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার খান। ফ্রোজেন শোল্ডার এর ব্যায়াম নিয়মিত করলে ৬-১২ মাসের মধ্যে সুস্থতা আসে।
ফ্রোজেন শোল্ডার এর চিকিৎসা
ফ্রোজেন শোল্ডারের চিকিৎসা শুধুমাত্র ব্যায়ামে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর জন্য ধাপে ধাপে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রথমে সাধারণত ওষুধ যেমন NSAIDs ব্যবহার করা হয়, যা ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অনেক সময় স্টেরয়েড ইনজেকশনও দেওয়া হয়, যা কাঁধের ভেতরের প্রদাহ দ্রুত কমায়। তবে চিকিৎসার মূল অংশ হলো ফিজিওথেরাপি, যেখানে বিশেষজ্ঞরা রোগীকে ধীরে ধীরে নড়াচড়া ফিরিয়ে আনার জন্য ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যায়াম শেখান। তবুও যদি উন্নতি না হয়, তাহলে হাইড্রোডিলেশন বা সার্জারি বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি ঘরোয়া যত্ন যেমন আইস প্যাক, হিট থেরাপি, এমনকি আকুপাংচার বা ম্যাসাজ অনেক সময় উপকারে আসে। এই রোগের চিকিৎসায় ধৈর্য ধরা খুব জরুরি, কারণ এটি সময়সাপেক্ষ। রোগীর মানসিক সমর্থন, নিয়মিত ফলো-আপ এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তনও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, শুরুতেই লক্ষণ শনাক্ত করে সঠিক যত্ন নেওয়া এবং ইয়োগা অনুশীলন অনেক উপকার করে। এ ক্ষেত্রে পেইন কিউর (Pain Cure) একটি আধুনিক ও বিশ্বস্ত পেইন ম্যানেজমেন্ট সেন্টার, যেখানে ওজোন থেরাপি, ওজোন সওনা, ইলেক্ট্রো আকুপাংচার, আর-টি-এম-এস থেরাপি, ম্যানুয়াল ফিজিওথেরাপি, টেকার থেরাপি, ক্রায়ো থেরাপি, শকওয়েভ থেরাপি এবং পালস ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাপি (PEMF) এর মতো উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়। পাশাপাশি রোগীদের জন্য ঘরোয়া ব্যায়াম, ব্যথা প্রতিরোধের পরামর্শ এবং চিকিৎসকদের মতামতও তুলে ধরা হয়। পেইন কিউরের মূল লক্ষ্য হলো সকলকে ব্যথামুক্ত, সুস্থ ও সচেতন জীবনযাপনের পথে নিয়ে আসা।
অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য উত্তরা বা বনানী শাখায় সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে +8801774678604 নম্বরে যোগাযোগ করুন।
আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ পেইন কিউর
বিস্তারিত জানুন: পিঠের মাঝখানে ব্যথা কারণ এবং একটি বিস্তারিত গাইড লাইন
বিস্তারিত জানুন: পিঠের বাম পাশে ব্যথার কারণ গুলো কি কি জেনে নিন!!
সাধারণ জিজ্ঞাসা
ফ্রোজেন শোল্ডার হওয়ার কারণ কি?
এটি একটি বল-এন্ড-সকেট জয়েন্ট। একে ফ্রোজেন শোল্ডার বলা হয় কারণ ব্যথার কারণে আপনি কাঁধ কম ব্যবহার করেন। কম ব্যবহারের ফলে কাঁধের ক্যাপসুল শক্ত ও ঘন হয়ে যায়, যা নড়াচড়াকে কঠিন করে এবং কাঁধ যেন জায়গায় জমে যায়।
ফ্রোজেন শোল্ডার কি সব সময় ব্যাথা করে?
কাঁধ নাড়ালে (কখনও কখনও তীব্র) ব্যথা অনুভব হয়। সময়ের সাথে এটি ধীরে ধীরে আরও খারাপ হতে পারে এবং রাতে ব্যথা বাড়তে পারে। কাঁধের নড়াচড়া সীমিত হয়ে যায়। এই অবস্থা ৬-৯ মাস পর্যন্ত থাকতে পারে।

Dr. Saiful Islam, PT, is a Consultant Physiotherapist with expertise in Orthopedics. He holds a BPT from Dhaka University, an MPT, and a Postgraduate Certification in Acupuncture from India, with specialized training in Ozone Therapy.


